Posts

Showing posts from May 12, 2021

স্মার্টফোনঃ মনোযোগ ক্ষমতা নষ্ট করছে

Image
বর্তমান পৃথিবীতে আড়াই বিলিয়নেরও বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে এবং তাদের অধিকাংশই এই ডিভাইসটি ছাড়া সময় কাটানোর কথা ভাবতেও পারে না। প্রতিনিয়ত এমন কোনো অ্যাপ বের হচ্ছে, যেটি এরকম আসক্তির গতি আরো বৃদ্ধি করে দেয়। এরকম কোম্পানিগুলোর জন্যে এই আসক্তিটি বিশাল অঙ্কের মুনাফা বয়ে আনে। তবে, এরজন্যে ব্যবহারকারীরা যতটুকু দায়ী, তার চেয়েও বেশি দায়ী হচ্ছে স্মার্টফোন ডিভাইসগুলো। সাধারণ মনোবিজ্ঞানকে অনুসরণ করে এই ডিভাইসগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, আমরা তার ফাঁদে পড়তে বাধ্য। তবে, যে কেউই এই চাতুরিটি বুঝতে পারলে তা থেকে বের হয়ে আসার পথ খুঁজে পাবে। কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ‘মনোযোগ’ একটি সীমিত সম্পদের মতো কাজ করে। অনেকটা যেমন প্রতি মাসে আপনার ব্যবহারের জন্যে টাকার পরিমাণ নির্দিষ্ট। কোনো সময়ে এই নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি মনোযোগ আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না। আজকাল আমাদের বেশিরভাগ মনোযোগই ব্যবহৃত হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ও কন্টেন্টে। আমরা এখন যেখানে বাস করি, সেটি হচ্ছে প্রতিনিয়ত মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করার দুনিয়া। কিছু স্টাডি অনুযায়ী, প্রতিনিয়ত আমাদের ফোনে গড়ে ৬৩টির বেশি নোটিফিকেশন আসে। ইমেইল ইনবক্সে এই সংখ্যাটি হচ্ছে ...

নীরদ চৌধুরী: একজন বিলেতপ্রেমী বাঙালি সাহিত্যিক

Image
  নীরদ চন্দ্র চৌধুরী। ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষের পূর্ব বাংলার কিশোরগঞ্জ জেলায় তার জন্ম। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৯৯ সালের ১ আগস্ট ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে। নীরদ চৌধুরীকে নিয়ে এককথায় বলতে গেলে তিনি  ভুল সময়ে ভুল জায়গায়  জন্ম নিয়েছিলেন। সময়ের চেয়ে অগ্রগামী, পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে বিশ্বাসী, দ্বান্দ্বিক এক জীবনদর্শনে আস্থা রাখা এই তুমুল আলোচিত-সমালোচিত ব্যক্তিকে নিয়েই আজকের এই লেখা।  নীরদ পৃথিবীর আলো দেখেছিলেন এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে। অথচ তার আত্মজীবনী লেখা হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর বয়সে- ‘দ্য অটোবায়োগ্রাফি অভ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান’। আধুনিক ভারতের প্রসিদ্ধ ইতিহাস গবেষক ডেভিড লেলিভেল্ড নীরদকে নিয়ে বলেন,  নীরদ মূলত একজন আগাগোড়া উদ্ধত, ভয়ানক, দ্বন্দ্বমুখর ব্যক্তিত্ব, যিনি একইসাথে সাম্রাজ্যবাদী সাহিত্যের ঝাণ্ডাধারী। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পর সামরিক বাহিনীর অ্যাকাউন্টস বিভাগে ক্লার্ক পদে যোগ দেন। বাকিটা জীবন তিনি কাটিয়েছেন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করে। ইংরেজদেরকে তিনি তাদে...

ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ: উপমহাদেশে মুসলিম ও বাঙালি জাগরণের পথিকৃৎ

Image
"আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙ্গালী। প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারা ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ এঁকে দিয়েছেন, যে মালা তিলক টিকিতে বা টুপি লুঙ্গি দাঁড়িতে তা ঢাকবার জো নেই। হিন্দু-মুসলমান মিলিত বাঙালি জাতি গড়িয়া তুলিতে বহু অন্তরায় আছে, কিন্তু তাহা যে করিতেই হইবে। "   উপরের উক্তিগুলোই বলে দেয় ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর হৃদয়ে লালিত জাতিসত্ত্বার প্রতি মমত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ। এদেশে বাঙালি এবং মুসলিম জাতিসত্ত্বা একইসাথে ধারণ করেছেন, এমন ব্যক্তিদের তালিকায় বহুভাষাবিদ এই ব্যক্তির নাম প্রথমেই থাকবে। ১৯৫২ সালে তিনি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে জোরালো বক্তব্য উপস্থাপনের পরই ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী, গবেষক, আইনজীবী, অনুবাদক, কবি, সাহিত্যিক, লোকবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং ভাষাসৈনিক।  কাজী মোতাহার হোসেনের সাথে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ; image source: tripadvice.xyz  জন্ম ও শিক্ষাজীবন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ১৮৮৫  সালের ১০ জুলাই, পশ্চিম বাংলার চব্বিশ পরগনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মফিজ উদ্দিন আহমদ ছিলেন মধ্যযুগীয...